Friday, February 18, 2011

21st feb blog

বাংলা ভাষায় কম্পিউটিং এর প্রবর্তক কে বা কারা তা নিয়ে এখন ও অনেকেই তর্কাতর্কি করেন সঠিক ইতিহাসটি অনেকেরই অজানা। অনেকেই মনে করেন বিজয় হচ্ছে প্রথম সফট কিন্তু মজার ব্যাপার হল বিজয়ের ও অনেক আগে ১৯৮৩ সালে বাংলা ভাষাতে লেখার প্রথম সফট শহীদলিপি তৈরী করেন ,সে সময় তিনি বেক্সিমকোতে কাজ করতেন।তারও অনেক আগে ১৯৬৫ সালে অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী প্রথম টাইপরাইটারের জন্য লেআউট তৈরী করেন,যা ছিল বিজ্ঞানসম্মত তৈরিকৃত প্রথম লেআউট যা কম্পিউটার কীবোর্ড এর লেআউট এর মডেল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

এখন একটা জিনিস বলে রাখা ভাল যখন ইউনিকোড ছিল না তখন কম্পিউটারে বাংলা লেখা কষ্ট ছিল,তখন ছিল আসকি কোড আর আসকি কোড এ বাংলা এর জন্য আলাদা কোন সিম্বল ছিল না,তাই বাংলা হরফগুলোকে প্রথম এ রোমান হরফের চিহ্নে পরিবর্তন করে ইনপুট দেওয়া হত,আর এই জিনিসটাই বাংলা কম্পিউটিং এ চলে এসেছে ইউনিকোড ভিত্তিক সফটগুলো আসার আগে পর্যন্ত।

বিজয় সফট যেটি প্রথম ম্যাকের জন্য তৈরী হয়েছিল তা তৈরী করে আনন্দ কম্পিউটার্স একজন ভারতীয় ডেভেলপার এর সাহায্য নিয়ে '৮৭ এর দিকে,বিজয় পরবর্তী ভার্সনগুলোর মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় বিজয় ২০০০ তৈরী করেন বাংলাদেশের অন্যতম প্রোগ্রামার মুনিরুল আবেদীন পাপ্পানা(বর্তমানে মাইক্রোসফট এ কর্মরত,মাইক্রোসফট ইন্ডিক টুলস প্রজেক্ট এ যুক্ত)।বিজয় এবং অন্যান্য আসকি ভিত্তিক সফতগুলোর সমস্যা ছিল এইগুলো নেট এ পড়তে গেলে ইউজারদের নিকট একই ফন্ট থাকতে হত,যা দূর করে ইউনিকোডভিত্তিক বাংলা ফন্ট ও সফটগুলো।যে সমস্ত বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান এর সাথে জড়িত তাদের মধ্যে আছেন,BDOSN,একুশে।অর্গ,অঙ্কুর প্রজেক্ট,লিনাক্স মিন্ট ও উবুন্টতে প্রভাত।ওয়েবে বাংলা ইউনিকোড ব্যবহার এর সবচেয়ে চমৎকার উদাহারন বাংলা উইকিপিডিয়া।

অভ্রকে বলা যায় বর্তমানে বাংলা ভাষায় সবচেয়ে জনপ্রিয় সফট।আমি প্রথম ব্যবহার করি এইটি যখন কলেজ প্রথম বর্ষে মানে ২০০৬ এর শেষের দিকে ,অভ্র এর সর্বাধিক বড় সুবিধা হল ফোনেটিক,অর্থাৎ যা লেখব আমি তাই দেখব যেমন যদি লিখি ami khai তা হবে আমি খাই।অভ্র এর আরেকটি সুবিধা এইটি ওপেনসোর্স অর্থাৎ কোডিং জানলে এইটি নিজের মত চেঞ্জ করা যাই।আর আরেকটি কারণে এর প্রতি ভালবাসা আরো বেড়েছে,যখন নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরী এর সময় বাংলা টাইপিং টেন্ডার আহবান করেছিল ,তখন সবচেয়ে কম দরপত্রটি ছিল মাত্র ৫০ কোটি!আর অভ্র এবং অমিক্রোন ল্যাবের মেহেদি হাসান খান কোন টাকাই নেন নি।আর সেই প্রতিষ্ঠানটি পরে নেট এ যা শুরু করেছিল দেখার বিষয় ছিল গত বছর,আমরা আমাদের ভাষার সৈনিকদের নিয়ে গর্ব করি,তাই বলে কি একুশ শতকের এই ভাষাসৈনিক মেহেদি হাসান খান এবং তার অমিক্রোন ল্যাবকে কি আমরা একুশে পদক দিতে পারি না!

বিঃদ্রঃএই লেখাটি লিখতে অভ্র ব্যবহার করা হয়েছে,ফন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে সিয়াম রূপালী,লেখা হয়েছে লিব্রে অফিসে এবং এই সব কিছুই ওপেন সোর্স।আসুন না আমরা পাইরেসি বন্ধ করে এই সব সফট ব্যবহার করি এবং পাইরেসি জর্জরিত দেশসমূহের লিস্ট থেকে বাংলাদেশকে সরিয়ে নি,এই একুশে এই হোক অঙ্গীকার।।